বুকবিল্ডিং পদ্ধতির সঠিক প্রয়োগে কমিটি গঠন
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে বুকবিল্ডিং পদ্ধতির প্রয়োগ সঠিকভাবে হয়েছে কি-না তা যাচাইয়ে ৪ সদস্যের আহবায়ক কমিটি গঠন করেছে সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। এসইসির নির্বাহি পরিচালক এটিএম তারিকুজ্জামানকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অন্য সদস্যরা হচ্ছেন ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা এবং মার্চেন্ট ব্যাংক এসোসিয়েশনের সভাপতি আরিফ খান। রিপোর্ট দেয়ার কোন সময় বেঁধে দেয়া না হলেও তা দ্রুত দিতে কমিটিকে বলা হয়েছে। এসইসির বাজার পর্যালোচনা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাহি পরিচালক আনোয়ারুল কবীর ভূঁইয়া ।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে বুকবিল্ডিং পদ্ধতি সঠিকভাবে প্রয়োগ হয়েছে কিনা এবং এ পদ্ধতিতে দর নির্ধারনের ক্ষেত্রে কোন ধরনের কারসাজির আশ্রয় নেয়া হয়েছে কিনা সে বিষয়টি খতিয়ে দেখবে আহবায়ক কমিটি। এছাড়া কিভাবে বুকবিল্ডিং পদ্ধতি আরো গ্রহণযোগ্য করা যায় সে বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে রিপোর্ট প্রদান করবে কমিটি।
এর আগে গত ৯ জুন শেয়ারের নির্দেশক মূল্য নির্ধারণে বিতর্কিত বুকবিল্ডিং পদ্ধতি সংশোধন করে এসইসি। নির্দেশক মূল্য নির্ধারণে কারসাজি প্রমাণিত হওয়ায় এ সংশোধন করা হয়। সংশোধন অনুযায়ী শেয়ারের প্রাথমিক দর নির্ধারণের জন্য সর্বনিম্ন তিন ক্যাটাগরির ৫টি প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে সকল যোগ্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীকে মূল্য নির্দেশের জন্য আহ্বান জানাতে হবে।
পাশাপাশি বিদ্যমান ব্যবস্থায় নির্দেশক মূল্য প্রস্তাবের প্রক্রিয়ায়ও পরিবর্তন আনা হয়। রোড-শো’র জন্য নির্ধারিত দিনে কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নির্দেশক মূল্য গ্রহণ করা যাবে না বলে সংশোধনে উল্লেখ করা হয়। রোড-শো আয়োজনের পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে যোগ্য প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা এবং আর্থিক বিশ্লেষকের (ফাইন্যান্সিয়াল এনালিস্ট) যৌথ স্বাক্ষরে নির্দেশক মূল্যের প্রস্তাবনা পেশ করতে হবে। অংশগ্রহণকারী সকল প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবনার গড়ের ভিত্তিতে নির্দেশক মূল্য নির্ধারণ করা হবে। তবে এই প্রক্রিয়ায় ৫টি মার্চেন্ট ব্যাংকসহ কমপক্ষে ১৫টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ না করলে পুনরায় নির্দেশক মূল্য নির্ধারণের জন্য প্রস্তাব আহ্বান করতে হবে। এর আগে সর্বনিম্ন তিন ক্যাটাগরির মোট ৫টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করলেই নির্দেশক মূল্য নির্ধারণ করা যেতো।
২০০৯ সালে আইন প্রণয়নের এক বছর পর গত মার্চ মাস থেকে বুকবিল্ডিং পদ্ধতির বাস্তব প্রয়োগ শুরু হয়। ইতিমধ্যে ওশেন কন্টেইনার এবং খুলনা পাওয়ার এই পদ্ধতিতে মূল্য নির্ধারণ করে সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে শেয়ার বিক্রি শুরু করেছে। এছাড়া আরএকে সিরামিকস, মালেক স্পিনিং বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে মূল্য নির্ধারণের পর আইপিওতে লটারির মাধ্যমে বরাদ্দ প্রক্রিয়া শেষ করে। বুক বিল্ডিং পদ্ধতি প্রয়োগ করা এসব কোম্পানির শেয়ারের দর নিয়েই বাজার বিশ্লেষক ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরুর আগেই প্রতিটি কোম্পানির শেয়ার অতি মূল্যায়িত হয়েছে বলে তারা মনে করেন।
বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে নির্দেশক মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রেই কোম্পানিগুলো নিজেদের পছন্দ মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে অতিরিক্ত নির্দেশক মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মূল্য নির্ধারণে সমঝোতার সুযোগ বন্ধের জন্যই বিধিমালা সংশোধন করা হয় বলে এসইসি সূত্রে জানা গেছে। এরপরও বিতর্ক সৃস্টি হওয়ায় এ পদ্ধতির সঠিক প্রয়োগ নিয়ে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হলো।
0 comments:
Post a Comment