বড় আইপিও নিয়ে আসছে মবিল যমুনা
গ্রামীণফোনের পর দেশের শেয়ারবাজারে সবচেয়ে বড় প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও নিয়ে আসছে মবিল যমুনা এমজিএল বাংলাদেশ লিমিটেড। কম্পানিটি বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে চার কোটি শেয়ার ছেড়ে বাজার থেকে ৫০৮ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। গতকাল রবিবার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এঙ্চেঞ্জ কমিশন (এসইসি) কম্পানিটির শেয়ার ছাড়ার আবেদন অনুমোদন করেছে। সভা শেষে এসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আনোয়ারুল কবীর ভূঁইয়া এই অনুমোদনের কথা জানান।
তিনি জানান, যমুনা মবিলের ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ারের নির্দেশক দাম ঠিক করা হয়েছে ১২৭ টাকা। বুক বিল্ডিং পদ্ধতির নিয়ম অনুযায়ী, নির্দেশক দামের ভিত্তিতে প্রথমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ারের দরপ্রস্তাবে অংশ নেবে। সেখানে প্রতিষ্ঠানগুলো নির্দেশক দামের ২০ শতাংশ কম-বেশি হারে সর্বোচ্চ ১৫২ টাকা ৪০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন ১০১ টাকা ৬০ পয়সায় শেয়ার কেনার প্রস্তাব জমা দিতে পারবে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্ধারিত শেয়ার সর্বনিম্ন যে দামে বিক্রি সম্পন্ন হবে সেটিই হবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ারের ক্রয়মূল্য।
এসইসি সূত্র জানায়, ১৯৯৮ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রাইভেট লিমিটেড কম্পানি হিসেবে যাত্রা শুরু করে মবিল যমুনা। ৯৯ সালের মে মাসে সেটি বাণিজ্যিক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করে। ২০০৯ সালে এসে এটি পাবলিক লিমিটেড কম্পানিতে পরিণত হয়।
কম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১৪ কোটি তিন লাখ ২০ হাজার। এরমধ্যে ২৫ শতাংশ বা প্রায় সাড়ে তিন কোটি শেয়ার রয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান যমুনা অয়েলের হাতে। ইস্টকোস্ট গ্রুপের মালিকানাধীন ইসি সিকিউরিটিজ লিমিটেডের হাতে রয়েছে ৭৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ বা ১০ কোটি ৫২ লাখ ২০ হাজার শেয়ার। বাকি শেয়ারের মধ্যে আজম জে চৌধুরী, মেরিনা ইয়াসমীন চৌধুরী, তানজিল চৌধুরী, দিলরুবা চৌধুরী ও পার্কসাইন প্রোডাক্ট লিমিটেডের কাছে যথাক্রমে চার হাজার করে শেয়ার রয়েছে।
এসইসি সূত্র জানায়, বাজার থেকে সংগৃহীত টাকায় কম্পানিটি খুলনায় লিকুফাইড পেট্রলিয়াম গ্যাস ইউনিটসহ ব্যবসা সম্প্রসারণ কাজের পাশাপাশি জমি ও করপোরেট অফিস তৈরিতে খরচ করা হবে। কম্পানিটির বর্তমান পরিশোধিত মূলধন প্রায় ১৪০ কোটি টাকা।
জানা গেছে, বুক বিল্ডিংয়ের নিয়ম অনুযায়ী, মবিল যমুনার আইপিও প্রস্তাবের চার কোটি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে ৬০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য ২০ শতাংশ এবং প্রবাসী বাংলাদেশি ও মিউচুয়াল ফান্ডের জন্য ১০ শতাংশ করে শেয়ার বরাদ্দ থাকবে।
প্রাইম ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড কম্পানিটির শেয়ারের ইস্যু ব্যবস্থাপনার কাজ করছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে কম্পানিটি ১২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা মুনাফা করেছে। গ্রামীণফোনের পর এটিই সবচেয়ে বড় আকারের আইপিও।
২০০৯ সালের বাজারে আসা গ্রামীণফোন সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিওতে ছয় কোটি ৯৪ লাখ শেয়ার ছেড়েছিল। প্রতিটি শেয়ারের অভিহিত মূল্য ছিল ১০ টাকা। তার সঙ্গে ৬০ টাকা প্রিমিয়ামসহ প্রতিটি শেয়ার বিক্রি করা হয় ৭০ টাকা দরে। আর মবিল যমুনা বাজারে ছাড়ছে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের চার কোটি শেয়ার।
ডিএসই সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশের ২৪৩টি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কম্পানির মধ্যে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আছে ১১টি কম্পানি। নতুন এই কম্পানিটি তালিকাভুক্ত হলে এ খাতের কম্পানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১৩টিতে।
0 comments:
Post a Comment