গ্রামীণফোনের শেয়ার নিয়ে কারসাজি : আবারও এসইসির শুনানিতে ইয়াকুব আলী
গ্রামীণফোনের শেয়ার নিয়ে কারসাজির অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল এসইসির শুনানিতে অংশ নিয়েছেন পুঁজিবাজারের বহুল আলোচিত ইয়াকুব আলী। শুনানিতে ইয়াকুব আলী আইনজীবীর মাধ্যমে তার বক্তব্য দিয়েছেন। এতে তিনি গ্রামীণফোনের শেয়ার নিয়ে কারসাজির অভিযোগ অস্বীকার করেন। শুনানি হলেও এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি কমিশন।
এর আগে কারসাজির মাধ্যমে তালিকাভুক্ত ম্যারিকো কোম্পানির শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধিতে সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়ায় এয়াকুব আলীকে ১ কোটি টাকা জরিমানা করেছিল কমিশন। সে জরিমানা মওকুফে কমিশনে আবেদন করা হলেও কমিশন তার আবেদন মঞ্জুর করেনি। দেশের শেয়ারবাজারে শেয়ারের দর বৃদ্ধিতে কারসাজির ঘটনায় কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে এ যাবত্কালের সর্বোচ্চ জরিমানা এটি। ম্যারিকোর শেয়ারে কারসাজির মাধ্যমে ইয়াকুব আলী খন্দকার ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা মুনাফা করে নিয়েছেন বলে এসইসির তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
জানা গেছে, শুনানিতে গ্রামীণফোনের শেয়ার কেনার কারণ বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়। জবাবে তার আইনজীবী বলেন, বেশি শেয়ার কেনা যাবে না—এ ব্যাপারে কমিশনের কোনো ধরনের আইন রয়েছে কিনা? ইয়াকুব আলীর আইনজীবীর এ বক্তব্যে কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য দেয়া না হলেও বিপুলসংখ্যক শেয়ার ক্রয় করায় তাকে ভর্ত্সনা করা হয়। এছাড়া কমিশন গ্রামীণফোনের শেয়ার ক্রয়েরও কারণ জানতে চাইলে ইয়াকুব আলীর আইনজীবী একই বক্তব্য দেন। শুনানিতে এয়াকুব আলীর পক্ষে অ্যাডভোকেট রাবেয়া বেগম অংশগ্রহণ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্রামীণফোনের শেয়ারের অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধিতে গত ২৭ জানুয়ারি এসইসি’র পরিচালক মো. রেজাউল করিমকে প্রধান করে দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। প্রথম দফায় কমিটিকে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু সময়মত তা করতে না পারায় আরও দু’দফা সময় বাড়িয়ে তা ৩১ মার্চ পর্যন্ত করা হয়। তদন্ত কমিটি শেয়ারের কারসাজির বিষয়ে তদন্ত করে ৩১ মার্চ কমিশনের চেয়ারম্যানের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। কোম্পানিটির বিপুলসংখ্যক শেয়ার ক্রয় করে দরবৃদ্ধিতে ইয়াকুব আলীর ভূমিকা রয়েছে বলে কমিশন মনে করছে। আর তারই প্রেক্ষিতে ইয়াকুব আলীকে শুনানিতে ডেকেছে কমিশন। গতকাল এসইসিতে উপস্থিত হয়ে নিজের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন তিনি।
এখানে আরও উল্লেখ্য, অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি গ্রামীণফোনের শেয়ার লেনদেনে নেটিং (আর্থিক সমন্বয়) সুবিধা বন্ধ করে এসইসি। নেটিং সুবিধা বন্ধ করে দেয়ার পরও তা অব্যাহত রাখার ও কোম্পানিটির দর বৃদ্ধিতে কারসাজির অভিযোগে সিটি ব্যাংক ব্রোকারেজ হাউস, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স ও লংকাবাংলা সিকি্্্উরিটিজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় এসইসি। এ তিন প্রতিষ্ঠানও এরই মধ্যে এসইসিতে তাদের বক্তব্য দিয়েছে। নেটিং সুবিধা বন্ধের পর শেয়ারের দর বাড়ার গতি কিছুটা কমে যায়। কিন্তু পরে আবার শেয়ারের দর আগের গতিতে বাড়তে থাকে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এ কোম্পানির পিই রেশিও ৫০ ঊর্ধ্ব হওয়ায় মার্জিন লোন বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপরও শেয়ারের দর বাড়তে থাকে। সর্বশেষ ১৮ ফেব্রুয়ারি এসইসি গ্রামীণফোন ও ম্যারিকো কোম্পানিকে এসইসির পাবলিক মার্কেট থেকে স্পট মার্কেটে পাঠিয়ে দেয়া হয়। বর্তমানে গ্রামীণফোনের শেয়ার স্পট মার্কেটেই লেনদেন হচ্ছে।
0 comments:
Post a Comment