মার্জিন ঋণ অযোগ্য কোম্পানির লেনদেনের তথ্য চেয়ে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে এসইসির চিঠি
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত মার্জিন অযোগ্য কোম্পানির শেয়ার লেনদেন এবং যে সব বিনিয়োগকারী এসব শেয়ার ক্রয় করছেন তার তথ্য জানতে চেয়ে এবার মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে চিঠি পাঠিয়েছে সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। গতকাল কমিশনের সার্ভিল্যান্স বিভাগ থেকে পাঠানো চিঠিতে গত ২৮ তারিখে মার্জিন অযোগ্য কোম্পানির শেয়ার লেনদেন ও যে সব বিনিয়োগকারী এসব শেয়ার ক্রয় করেছে তার প্রতিবেদন আগামী ৩ অক্টোবরের মধ্যে কমিশনে দাখিল করতে বলা হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি কমিশনের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, পুঁজিবাজারে মার্জিন অযোগ্য কোম্পানির শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে। এসব কোম্পানির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে মার্জিন ঋণের প্রভাব থাকতে পারে বলে মনে করছে কমিশন। কোনো ব্রোকারেজ হাউস বা মার্চেন্ট ব্যাংক মার্জিন অযোগ্য কোম্পানির শেয়ারের বিপরীতে ঋণ দিয়েছে কিনা—তা যাচাই করতেই মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রেকারেজ হাউসের কাছ থেকে এ ধরনের তথ্য চাওয়া হয়েছে। মার্জিন অযোগ্য কোম্পানির শেয়ারের বিপরীতে ঋণ দেয়া হলে সংশ্লিষ্ট মার্চেন্ট ব্যাংক বা ব্রোকারেজ হাউসের বিরুদ্ধে সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, একই বিষয়ে ব্রোকারেজ হাউসের তথ্য চেয়ে গত মঙ্গলবার দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে চিঠি দিয়েছিল কমিশন। চিঠির নির্দেশ অনুযায়ী গত ২৭ সেপ্টেম্বর মার্জিন অযোগ্য কোম্পানিতে বিনিয়োগকারী সংক্রান্ত প্রতিবেদন গতকালের মধ্যেই কমিশনে জমা দেয়ার কথা রয়েছে। জানা গেছে, এসইসির নির্দেশ অনুযায়ী ব্রোকারেজ হাউসগুলো মার্জিন ঋণ অযোগ্য কোম্পানির বিনিয়োগকারী সংক্রান্ত লেনদেন তথ্য কমিশনে জমা দিতে শুরু করেছে।
এদিকে গত মঙ্গলবার কমিশনের সার্ভিল্যান্স বিভাগ মার্জিন অযোগ্য কোম্পানির শেয়ার লেনদেন, ব্রোকারেজ হাউসের গত চার মাসের উদ্বৃত্ত মূলধন ও দায়-দেনার হিসাব আগামী ৩ অক্টোবরে কমিশনের নিকট জমা দেয়ার জন্য স্টক এক্সচেঞ্জকে যে নির্দেশ দিয়েছে তার সমালোচনা করছেন সংশ্লিষ্টরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসইর একজন সদস্য বলেন, আমরা অবশ্যই কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করব। কমিশন প্রয়োজনে যে কোনো তথ্য চাইতে পারে। কিন্তু এত অল্প সময়ের মধ্যে যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে তা সরবরাহ করা কঠিন। এছাড়া কমিশনের চিঠির ব্যাখ্যা নিয়ে নানা ধরনের বিভ্রান্তি হচ্ছে। একেকজন একেকভাবে ব্যাখ্যা করছে। তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, তথ্য চেয়ে কমিশন যে চিঠি দিয়েছে আধঘণ্টা পর পর তা ডিএসইর ওয়েবসাইটে প্রকাশে বাধ্য করা হচ্ছে। এর অর্থই হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে এসইসি বাজার নিয়ন্ত্রণের ইচ্ছা।
তবে এ বিষয়ে কমিশনের একজন নির্বাহী পরিচালক বলেন, আতঙ্ক নয়, বরং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে দিতেই তা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হাইকোর্টের আদেশে এনএভিভিত্তিক মার্জিন ঋণ নির্ধারণ এবং ঋণ-অযোগ্য কোম্পানির নেটিং বাতিলের নির্দেশনা স্থগিত হয়ে যাওয়ায় শেয়ারবাজারে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সামগ্রিক পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করেছে এসইসি। পাশাপাশি হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করার জন্য স্বল্প সময়ের মধ্যে সুপ্রিমকোর্টে আপিলের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। কিন্তু মধ্যবর্তী এই সময়ে যাতে বাজারে অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা তৈরি হতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে সার্ভিল্যান্স বিভাগ ঋণ-অযোগ্য কোম্পানির লেনদেনের গ্রাহকভিত্তিক তথ্য, ব্রোকারেজ হাউস এবং এর শীর্ষ গ্রাহকদের আর্থিক হিসাব চেয়েছে।
src-Amar desh
0 comments:
Post a Comment